স্কাউট আইন

স্কাউট আইন ৭টি। আইন গুলো হচ্ছে

  1. স্কাউট আত্মমর্যাদায় বিশ্বাসী।
  2. স্কাউট সকলের বন্ধু।
  3. স্কাউট বিনয়ী ও অনুগত।
  4. স্কাউট জীবের প্রতি সদয়।
  5. স্কাউট সদা প্রফুল্ল।
  6. স্কাউট মিতব্যয়ী।
  7. স্কাউট চিন্তা, কথা ও কাজে নির্মল।

ইংরেজীতে স্কাউট আইন:

Scout Law

  1. A Scout’s honor is to be trusted.
  2. A Scout is a friend to all.
  3. A Scout is courteous and obedient.
  4. A Scout is kind to animal.
  5. A Scout is cheerful at all times.
  6. A Scout is thrifty.
  7. A Scout is clean in thought, word and deed.

স্কাউট আইনের তাৎপর্য ও ব্যাখ্যা:
স্কাউট আইন একজন সুনাগরিক হবার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। এটি এমন নীতিমালা, যা একজন স্কাউট অবশ্যই মেনে চলবে। স্কাউট আইনের মধ্যে সুস্পষ্ট ইতিবাচক গুণাবলী এবং কর্তব্যের যে বিধান রয়েছে তাতে রয়েছে সম্মান বা (Honour), আনুগত্য বা (Loyalty), সাহায্য বা (Help), বন্ধুত্ব বা ( Friendship), বিনয় বা (Courtesy), সাহস বা (Courage), প্রফুল্লতা বা (Cheerfulness) এবং মিতব্যয়ীতা বা (Thriftiness) ইত্যাদি যা একজন ছেলে বা মেয়ের চরিত্র এবং ব্যক্তিত্বকে মজবুত ও দৃঢ় করে তুলে। দৈনিক সৎকাজ (Good Turn), অপরের জন্য ভাবা এবং কাজ করার অভ্যাস তৈরি করে দেয়।

স্কাউটিং-এর সাতটি আইনের তাৎপর্য:

১. স্কাউট আত্মমর্যাদায় বিশ্বাসী: এর মূল অর্থ নিজের সম্মান অক্ষুন্ন রাখার দৃঢ় প্রত্যয়। সৎ, সত্যবাদী ও বিশ্বাসী এবং নির্ভরযোগ্য এসব বিশেষ গুনগুলোই আত্মমর্যাদা।। আত্মমর্যাদা একজন মানুষের কাছে অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ। মূলত এই আত্মমর্যাদা বোধই একজন ব্যক্তির আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। একজন স্কাউটের আত্মমর্যাদা এমন হবে যাতে সবাই তার উপর আস্থা রাখতে পারে।

২. স্কাউট সকলের বন্ধু: স্কাউট হিসেবে সে অপরকে অত্যন্ত আপন করে ভেবে থাকে। সকলের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ বা ভাই এর মতো আচরণ করে। একজন স্কাউট এর কাছে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ধনী, গরিব নির্বিশেষে সকলেই সমান। সংরক্ষণবাদী মনোভাব বর্জন করে অন্যের ভালো দিকটাকে স্কাউটরা গ্রহণ করে থাকে। তার এমন আচরণের কোন ভৌগলিক সীমারেখা নেই। একজন স্কাউটের কাছে অনুসরণীয় হলো,
“সবার উপরে মানুষ সত্য,
তাহার উপরে নাই”

৩. স্কাউট বিনয়ী ও অনুগত: প্রাচীনকালে বীরপুরুষগণ নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি সদয় ও উত্তম আচরণ করতেন। স্কাউটরাও অবশ্যই অনুরূপ আচরণ করবে। একজন স্কাউট তার বয়োজ্যেষ্ঠ, পিতা-মাতা, শিক্ষক, ইউনিট লিডার ও উপদল নেতার অনুগত হবে এবং সকলের সাথে বিনয়ের সাথে কথা বলবে। একজন স্কাউটের আচার-আচরণে বিনয় প্রকাশ পাবে।

৪. স্কাউট জীবের প্রতি সদয়: মানুষ সৃষ্টির সেরা প্রাণী। তাই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট অন্যান্য সকল জীবের প্রতি সহমর্মী হওয়া একজন স্কাউটের কর্তব্য। একজন স্কাউটের আচরণ কখনোই এমন হবে না, যার দ্বারা স্রষ্টার সৃষ্টি হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। কোন প্রাণীর প্রতি দুর্ব্যবহার মূলতঃ স্রষ্টার সাথে দুর্ব্যবহারের সামিল। এ ক্ষেত্রে একজন স্কাউট হবে বিশাল এবং মহৎ চিত্তের একজন মানুষ।

৫. স্কাউট সদা প্রফুল্ল: একজন স্কাউটকে অবশ্যই নির্ভীক এবং দৃঢ় মনোবলের অধিকারী হতে হবে। কোন বিপদের মুহূর্তে সে বিচলিত হবে না। ধীর ও স্বস্থির সাথে হাসিমুখে সে বিপদের মাত্রা লক্ষ্য করবে এবং তার কি কি করণীয় সেগুলো নির্ধারণ করে। অতপর সে মোতাবেক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

৬. স্কাউট মিতব্যয়ী: একজন স্কাউট দূরদৃষ্টি গুণসম্পন্ন হবে। সে সকল সময় ভবিষ্যতের কথা ভেবে কাজ করবে। বর্তমানে তার যে সম্পদ বা সুযোগ-সুবিধা আছে ভবিষ্যতে সেসব নাও থাকতে পারে । তাই বর্তমানের আনন্দ বা সুযোগের মধ্যে ডুবে না থেকে ভবিষ্যতে যখন তার এসব থাকবেনা তখন কিভাবে দিন চলবে সে বিষয়ে ভাববে। এক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর মাধ্যমে ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিছুটা সঞ্চয় করবে। এর ফলে অনাকাংক্ষিত দুর্যোগের সময়ে সে এই সঞ্চয় কাজে লাগাতে পারে। আর্থিক মিতব্যয়ীতা ছাড়াও কথা ও সময়ের দিক থেকেও একজন স্কাউট হবে মিতব্যয়ী। একজন স্কাউট কখনোই অযথা বাক্য ব্যয় বা সময় নষ্ট করে না।

৭. স্কাউট চিন্তা, কথা ও কাজে নির্মল: একজন স্কাউটকে শুধুমাত্র সুস্থ ও সুঠাম দেহের অধিকারী হলে চলবেনা বরং তাকে হতে হবে সুন্দর মনের অধিকারীও। সে কখনোও অপরের অনিষ্টজনক চিন্তা করবে না। কিভাবে অপরের উপকার করা যায় এই হবে তার চিন্তা-ভাবনা। কোন কাজে কেও কষ্ট পাবে এমন কাজ সে কখনোই করবে না। তার চিন্তা ও কাজ হবে একদম স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন। এগুলোই হবে একজন স্কাউটের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।

স্কাউটদের সাতটি আইন সহজে মনে রাখার জন্য দুই লাইনের একটি ছড়া আছে। এটি হচ্ছে:

“বিশ্বাসী বন্ধু বিনয়ী সদয়
প্রফুল্ল মিতব্যয়ী নির্মল রয়”


0 0 votes
Article Rating
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments