ধর্মপালন – ইসলাম ধর্ম

ধর্মপালন

ধর্মের মূল ভিত্তি হচ্ছে সংশ্লিষ্ট গ্রন্থসমূহ। কোরআন, হাদীস, বেদ, পুরান, বাইবেল, ত্রিপিটক বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় পুস্তক। এ গ্রন্থগুলােতে একদিকে যেমন ধর্মীয় বিধি বিধান রয়েছে, পাশাপাশি এগুলাে আইনের উৎস হিসেবে কাজ করে। ইসলামী আইনসমূহ মূলতঃ কোরআন ও হাদীসে বর্ণনা করা আছে। অনেক বিষয়ে ইসলামী চিন্তাবিদগণ কোরআন ও হাদীসের আলােকে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। সেগুলােকে বলা হয় “ইজমা“। আবার কোরআন ও হাদীসের ব্যাখ্যার আলােকে বর্তমান অবস্থার সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে ইসলামী চিন্তাবিদগন কোন বিষয়ে একমত হওয়াকে বলে “কিয়াস”। কাজেই ইসলামী আইনের মূল উৎস হচ্ছে কোরআন, হাদীস বা সুন্না, ইজমা এবং কিয়াস। একইভাবে হিন্দু আইনের মূল উৎস হচ্ছে বেদ, পুরান, নিবন্ধ ও ব্যাখ্যা। সম্পদ বন্টন, সম্পদের ব্যবস্থাপনা, ওয়াকফ, দেবােত্তর, দান, উইল, অভিভাবকত্ব, বিবাহ, দত্তক ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট ধর্মাবলম্বীগণের ধর্মীয় বিধি বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হয়। দেশের প্রচলিত আইন এ সকল ক্ষেত্রে ধর্মীয় আইনের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে।


ইসলাম ধর্ম

ইতােপূর্বে তােমরা সদস্য ব্যাজ স্তরে কালেমা, নামাজ, রােজা, শবেকদর, জুমাতুল বিদা, ঈদুল ফিতর, হজ্জ্ব, ঈদুল আজহা, যাকাত, শবে মেরাজ, শবে বরাত, ফাতেহা দোয়াজ দহম, ফাতেমা ইয়াজ দহম, আশুরা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাজ স্তরে রােজা তিন প্রকার, রােজার নিয়তের বিবরণ, রমজান মাসে রােজার নিয়ত, ইফতারের বিবরন, ইফতারের নিয়ত, প্রােগ্রেস ব্যাজ স্তরে হজ্জ, কুরবানী ও যাকাত সম্পর্কে শিখেছ এবং ব্যক্তি জীবনে তা চর্চা করে যাচ্ছ। সার্ভিস ব্যাজের জন্য নিম্ন বর্ণিত ধর্মীয় বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে তা অন্যদেরকে শিক্ষাদান করতে হবে।

আকিকা : মুসলমানদের সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সন্তানদের মঙ্গল কামনা করে ছাগল বা গরু জবাই করে তার গােশত/মাংস চার ভাগ করে একভাগ দুঃস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়াকেই আকিকা বলে। আকিকা করা সুন্নত।

সন্তান জন্মাবার পর ৭, ১৪ বা ২১তম দিন অথবা সুবিধামত সময়ে তার একটি সুন্দর নাম রেখে আকিকা করা ভাল। ছেলেদের জন্য ২টি এবং মেয়েদের জন্য একটি ছাগল বা ভেড়া জবাই করতে হয়। তবে গরু বা মহিষ হলে প্রত্যেক ছেলে সন্তান এর জন্য ২ ভাগ এবং মেয়ে সন্তানের জন্য ১ ভাগ হিসাবে মােট সাত ভাগ করা যায়।

কোরবানীর পশুর মত আকিকার পশুও নিখুঁত হতে হবে এবং কমপক্ষে এক বছর বয়সের ছাগল বা ভেড়া অথবা দুই বছর বয়সের গরু বা মহিষ হওয়া দরকার। কোরবানীর পশুর মধ্যেও আকিকার জন্য ভাগ রাখা যায়।

আর্থিকভাবে কম সামর্থবান লােকদের ছেলে সন্তানদের জন্য ১টি ছাগল বা ১টি ভেড়া অথবা গরু/মহিষের ক্ষেত্রে ১ ভাগ হলেও চলবে। তবে অসামর্থবান লােকদের জন্য আকিকার প্রয়ােজন নেই।

জানাজার নামাজ : মৃত ব্যক্তির আত্মার মাগফেরাত কামনায় মুরদাকে বা মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার আগে যে নামাজ পড়া হয়, তাকে জানাজা বলে। জানাজার নামাজ পড়া ফরজে কেফায়া অর্থাৎ সবার পক্ষ থেকে কতক মুসলমান আদায় করলেই সবাই দায়মুক্ত হবে। কেউ আদায় না করলে সবাই দোষী হবে।

জানাজার নামাজে দুইটি কাজ অব্যশই করণীয় অর্থাৎ ফরজ। যেমন –

  • ৪ বার তাকবির দেয়া বা আল্লাহু আকবার বলা।
  • দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া।

এই নামাজে রুকু, সেজদা এবং বৈঠক নেই। নামাজ পড়ার নিয়ম হচ্ছে, প্রথম নিয়ত করে তাকবির বলে হাত বাঁধতে হবে এবং তারপর ছানা পড়তে হবে। এরপর ২য় তাকবির দিয়ে দরুদ পড়তে হবে, ৩য় তাকবির বলে আত্মার মাগফেরাত কামনার্থে দোয়া পড়তে হবে এবং ৪র্থ তাকবির বলে সালাম ফেরাতে হবে। ২য়, ৩য় বা ৪র্থ তাকবিরে নতুন করে হাত বাঁধতে হয় না। এভাবে জানাজার নামাজ শেষ হয়।

মুসলমান ছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বীগণ তাদের ধর্মের এই ধরণের প্রয়ােজনীয় বিষয়সমূহে জ্ঞান অর্জন করে ছােটদের মধ্যে শিক্ষাদান করবে।

কাফন : মুরদাকে গােসল করিয়ে দাফন করার উদ্দেশ্যে যে পবিত্র কাপড়ে আবৃত করে দাফন করা হয় তাই হচ্ছে কাফন। মুরদাকে উত্তর দিকে মাথা এবং দক্ষিণ দিকে পা রেখে শােয়ানাে হয় এবং পরে মুরদাকে দাফন করা হয়।

মুরদা পুরুষ হলে তিন প্রস্থ কাপড় লাগবে :

  1. লেফালা: মাথা থেকে পা পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের চেয়ে এক হাত বড়।
  2. ইজার: মাথা থেকে পা পর্যন্ত।
  3. পিরহান: ঘাড় থেকে পায়ের গােড়ালী পর্যন্ত।

মুরদা স্ত্রী-লােক হলে পাঁচ প্রস্থ কাপড় লাগবে :

  1. লেফালা: মাথা থেকে পা পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের চেয়ে একহাত বড়।
  2. ইজার: মাথা থেকে পা পর্যন্ত।
  3. পিরহান: ঘাড় থেকে পায়ের গােড়ালী পর্যন…
  4. ছিনাবদ্ধ: বগল থেকে হাঁটু পর্যন্ত।
  5. দামনী: মাথার চুল বাধার জন্য।

তবে অসমর্থ হলে পুরুষের তিন বা স্ত্রী লােকের পাঁচ প্রস্থ কাপড়ের কমেও দেয়া যেতে পারে।